June 1, 2025, 6:02 am

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক অনুমোদিত দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন পোর্টাল
সংবাদ শিরোনাম :
তরুণদের ক্ষমতার মোহ থেকে সরে আসতে হবে : রিজওয়ানা এবারও দেশী পশুতেই মিটবে কোরবানির চাহিদা, উদ্বৃত্ত থাকবে ২০ লাখ ৬৮ হাজার পশু ‘প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে মনে হচ্ছে আমরা মানুষ চিনতে ভুল করেছি’ শান্তি, গণতন্ত্র ও উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ-জাপান জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ সুন্দরবনে মৌসুমি প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ১ জুন থেকে শুরু, সহায়তার আওতা বৃদ্ধির দাবি দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ প্রধান উপদেষ্টার দাবি/‘সব দল নয়, একটি রাজনৈতিক দলই শুধু ডিসেম্বরে নির্বাচন চায়’ ঝিনাইদহ সীমান্তে অনুপ্রবেশের সময় নারী-শিশুসহ আটক ১৬ কুষ্টিয়া/কুমারখালী ও দৌলতপুরে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে দুইজনের মৃত্যু

ফারাক্কার প্রভাব/অর্ধেক হয়ে গেছে একসময়ের প্রমত্তা পদ্মার আয়তন, মৃতপ্রায় শাখা নদীগুলোও

দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
গঙ্গার পানি প্রবাহ ভাটিতে না নামায় ফারাক্কার সরাসরি শিকারে পরিণত হয়েছে পদ্মা নদী। ফারাক্কার বিরুপ প্রভাবে প্রতিদিনই কমছে পদ্মার ধারা। মৃতপ্রায় শাখানদীগুলোও। চার দশকে পদ্মার আয়তন কমেছে অর্ধেক। বছরে ২-১ মাস নদীতে পানি থাকে আর বাকি সময়জুড়ে বালু আর বালু। যার ফলে গত এক দশকে রাজশাহী ও আশপাশের এলাকায় কোনো ধরনের বন্যা হয়নি।
পানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতদিন পদ্মা নিজস্ব ধারায় চলতে পেরেছে ততদিন এটির রূপ ছিল প্রমত্তা। কিন্তু ১৭৭৫ সালের এপ্রিলে ভারতে ফারাক্কা বাঁধ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দিন যত যাচ্ছে রুগ্ন হচ্ছে পদ্মা। রাজশাহী পয়েন্টে খরা মৌসুমে পানির উচ্চতা কমেই চলেছে। এ বছর গত ১২ মে এখানকার পানির উচ্চতা নেমে যায় ৬ দশমিক ৯৫ মিটারে। চলতি বছরে এটিই সর্বনিম্ন স্তর। বর্ষা মৌসুমেও এখন আর আগের মত পানির প্রবাহ থাকে না।
এক গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৮৪ সালের তুলনায় শুষ্ক মৌসুমে রাজশাহী অংশের আয়তন কমেছে ৫০ শতাংশ। পানির গভীরতা কমেছে ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ। প্রবাহ কমেছে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ। দক্ষিণের সুন্দরবনে মিঠাপানির সরবরাহ কমেছে ৯০ শতাংশ। ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারিতে গঙ্গায় পানি প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৯০ হাজার ৭৩০ কিউসেক। ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারিতে পানি প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৭৫ হাজার ৪০৯ কিউসেক। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে গঙ্গায় পানি প্রবাহ কমেছে ১৫ হাজার ৩২১ কিউসেক। যদিও সে বছর গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল পূর্ববর্তী বছর গুলোর তুলনায় ১৯ দশমিক ২ শতাংশ কম।
বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ফারাক্কার ক্ষতিকর দিক নিয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বলা হয়, গঙ্গাসহ ভারত শতাধিক অভিন্ন নদীর পানি অন্যায়ভাবে প্রত্যাহারের ফলে উত্তরাঞ্চলের প্রায় দুই কোটি কৃষক সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। দেশের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের প্রায় চার কোটি মানুষ সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। গঙ্গা-কপোতাক্ষ প্রজেক্টে পানি স্বল্পতার কারণে ৬৫ শতাংশ এলাকায় সেচ প্রদান দারুণভাবে ব্যহত হচ্ছে। উজান থেকে স্বাদু পানির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। এর ফলে জমির উর্বরতা শক্তি কমে আসছে। বরেন্দ্র অঞ্চল বিশেষ করে উচ্চ বরেন্দ্রের একশত ভাগ গভীর নলকূপ অকেজো হয়ে গেছে। ২১ শতাংশ অগভীর নলকূপ প্রায় অকার্যকর। ভূগর্ভস্থ পানিতে আর্সেনিকের বিষাক্ত প্রভাবে উত্তর ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের অনেক জেলায় নলকূপের পানি খাবার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বৃহত্তর খুলনা অঞ্চলে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রচলিত ধান উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। স্বাদু পানির অভাবে কুষ্টিয়া, খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে সুন্দরবনের প্রাণবৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বরছেন, ‘ভারতের সঙ্গে যে চুক্তি রয়েছে সে অনুযায়ী পানি পাওয়া গেলেও এ পানি পদ্মার জন্য পর্যাপ্ত নয়। আগামী বছর পানি চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে।
নদী গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী বলেন, ‘ফারাক্কার প্রভাবে এ অঞ্চলের মানুষ চরম ক্ষতির শিকার হচ্ছে। পৃথিবীর কোনো দেশের সঙ্গে প্রতিবেশী রাষ্ট্র এমন আচরণ করেনি। আমাদের এখন ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। নিজেদের দাবির প্রতি সোচ্চার থাকতে হবে। এখানে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কোনো সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘নতুন চুক্তিতে ১৯৭৭ সালের চুক্তির মতো গ্যারান্টি ক্লস অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। যৌথ নদী কমিশনে নেপালকে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়মানুযায়ী যথাসময়ে বৈঠক করতে হবে।’

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

পুরোনো খবর এখানে,তারিখ অনুযায়ী

Mon Tue Wed Thu Fri Sat Sun
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
© All rights reserved © 2024 dainikkushtia.net
Maintenance By DainikKushtia.net